শিক্ষাজীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো মনোযোগ ধরে রাখা। পড়তে বসলে নানা রকম চিন্তা, মোবাইল ফোনের নোটিফিকেশন বা পরিবেশের শব্দ—এসব আমাদের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায়। তবে কিছু কার্যকর কৌশল মেনে চললে পড়াশোনায় মনোযোগ অনেকগুণ বাড়ানো সম্ভব।
১. পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন
একটি শান্ত, পরিপাটি এবং আলো-বাতাসযুক্ত জায়গা বেছে নিন। ডেস্কের উপর অপ্রয়োজনীয় জিনিস রাখবেন না। সুশৃঙ্খল পরিবেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে মস্তিষ্ককে পড়াশোনায় ফোকাস করতে সাহায্য করে।
২. পড়াশোনার আগে ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন
একসাথে বিশাল সিলেবাস ধরলে চাপ বেড়ে যায়। বরং প্রতিদিন ছোট ছোট অধ্যায় বা টপিক শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করুন। এতে অগ্রগতি দ্রুত চোখে পড়বে এবং মনোযোগ ধরে রাখা সহজ হবে।
৩. পোমোডোরো কৌশল ব্যবহার করুন
২৫ মিনিট পড়াশোনা করুন এবং ৫ মিনিট বিরতি নিন। চারটি সেশন শেষে একটু বড় বিরতি নিন (১৫–২০ মিনিট)। এই টেকনিক দীর্ঘ সময় পড়ার চাপ কমায় এবং মনোযোগ বাড়ায়।
৪. মোবাইল ফোন ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকুন
পড়াশোনার সময় ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ করুন বা মোবাইল অন্য ঘরে রাখুন। সোশ্যাল মিডিয়া সবচেয়ে বড় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে, তাই পড়ার সময় এটিকে এড়িয়ে চলা উচিত।
৫. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন
পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং নিয়মিত ব্যায়াম মনোযোগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্লান্ত শরীর বা ঘুমহীন মস্তিষ্ক কখনোই দীর্ঘ সময় পড়ায় মনোযোগ রাখতে পারে না।
৬. সক্রিয় শেখার অভ্যাস করুন
শুধু পড়া নয়, নোট তৈরি করা, আন্ডারলাইন করা, বা অন্য কাউকে বুঝিয়ে বলা—এসব করলে শেখার গভীরতা বাড়ে। এতে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহও বাড়ে।
৭. ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখুন
নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দিন কেন পড়াশোনা করছেন এবং এর ফলাফল কী হতে পারে। লক্ষ্য সম্পর্কে সচেতন থাকলে মনোযোগ ধরে রাখা অনেক সহজ হয়।
উপসংহার
পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখা একটি অভ্যাস। নিয়মিত চর্চা, সঠিক কৌশল এবং শৃঙ্খলা মেনে চললে এটি সহজ হয়ে যায়। তাই আজ থেকেই ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন এবং মনোযোগী শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলুন।


